সহদর মো: ইয়াসিন ও আরাফাত রহমান। তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। মে মাস থেকেই শুরু হয়েছে অনলাইনে ক্লাস। বেলা ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত অনলাইনে প্রতিদিন মায়ের ফোন ব্যবহার করে এভাবেই ক্লাসে অংশ নেয় তারা।
নগরীর সুপরিচিত স্কুলগুলোতে গত কয়েকমাস ধরেই এভাবে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
“স্কুলে যেতে পারছি না, বন্ধুদের সাথে দেখা হচ্ছে না। খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু স্যার-ম্যাডাররা অনলাইনে ক্লাস করাচ্ছে। এতে খুব ভালো হচ্ছে এবং আমরা শিখতে পারছি। আমরা খুব খুশি“
এসএসসি পরীক্ষার্থী নির্ঝর। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বিশেষ ক্লাসের পাশাপাশি নিয়মিত পরীক্ষাও হচ্ছে অনলাইনে ডিভাইসে প্রশ্নপত্র আর বাড়ীতে আগে থেকে আনা উত্তরপত্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পরীক্ষা।
করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার গত মার্চেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর মে মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিকের পাশাপাশি, মাধ্যমিকের সব ক্লাস শুরু হয়েছে অনলাইনে।
“যদি করোনার মধ্যে স্কুল খোলা থাকতো তাহলে স্বাস্থ্য ঝুকি থাকতো। কিন্তু এই অনলাইন ক্লাসের কারণে সেটা নাই। যার কারণে শিক্ষার্থীরা সুস্থভাবেই তাদের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারছে। যেকোন প্রবলেম থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে প্রশ্ন করা যায়। পরীক্ষা দিতে হলে পরীক্ষার খাতা নিয়ে এসে লিখে সেটা ছবি তুলে পাঠানো যায়। এভাবেই চলছে।“
তবে সরকারী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের চেয়ে বেসরকারী স্কুলগুলো বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলো ফেসবুক বা জুম ব্যবহার করে অনলাইনে পাঠদান শুরু করে করোনা সংকটের পর পরই।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শ্রেণীকক্ষের যে পড়াশোনা তার সাথে কোনভাবেই তুলনা চলেনা অনলাইন ক্লাসের। কিন্তু করোনাকালে বিকল্পের সেরা অনলাইন ক্লাস।
“অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থা না থাকলে, পড়ালেখার খুব খারাপ অবস্থা হতো। তারা অনেক পিছিয়ে যেতো। ইন্টারনেটের অনেক সুবিধা কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের জন্য বা অভিভাবকদের জন্য অনেক কষ্টের হয়। ইন্টারনেট খরচটা যদি একটু কমতো, তাহলে আরো ভালো হতো।“
শিক্ষক বাতায়নের এ্যাপ, ফেসবুক কিংবা ইউটিউবের রেকর্ডকৃত কনটেন্ট অথবা লাইভ মাধ্যমে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কার্যক্রম। শিক্ষকরা বলছেন, দিন যত গড়াচ্ছে, তত প্রাণবন্ত হচ্ছে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম।
রাজশাহী কোর্ট মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, সরকারের যে শিক্ষাকার্যক্রম অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে, আমরা শতভাগ চেষ্টা করছি সেই কার্যক্রমের সাথে অংশগ্রহণ করার। প্রথমদিকে স্টুডেন্ট কম ছিলো, অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করে এখন শিক্ষার্থীদের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি।
গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতে এখনো খুব বেশি প্রচলিত হয়নি ইন্টারনেট বা অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষাদান। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সংসদ টিভিতে প্রচারিত ক্লাসগুলো দেখতে উৎসাহিত করেন শিক্ষকরা।
রাজশাহী কোর্ট মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক মোহাম্মদ স্বপন, অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। তারা আমাদের ফোন করে জানায় যে, তাদের অনেকের ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্কের সমস্যা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হবার ক্ষেত্রে।
সহায়তায়: ইউনিসেফ