সাংবাদিককে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে আটক: ধিক্কার, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে আইসিটি আইনে গ্রেফতার করে হাসপাতালে হাতকড়া পরিয়ে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে অবিলম্বে তার নামে মামলা প্রত্যাহারের দাবী করছি।

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে তানভীর হাসান তানুসহ তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে শনিবার দুপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলা দায়ের করা হয়। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে এই মামলাটি করেন।

জনাব তানভীর হাসান তানু দৈনিক ইত্তেফাক, ইনডিপেনডেন্ট টিভি ও জাগো নিউজ’র ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি। এছাড়াও তিনি ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব’র দফতর সম্পাদক, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। এই মামলার অপর দুই আসামী হচ্ছেন বাংলাদেশ প্রতিদিন’র ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু ও নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম’র জেলা প্রতিনিধি রহিম শুভ।

জনাব তানভীর হাসান তানুর স্বজনরা জানান, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এখনো তিনি শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করছেন। তাকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। শনিবার রাত ৮ টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার পর হাতকড়া পরিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানা নিয়ে এসে আটকিয়ে রাখে। রাত ১০ টার দিকে তার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাতকড়া পরিয়েই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে হাসপাতালের বেডের সাথে হাতকড়া পরিয়ে আটকিয়ে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানবাধিকার লংঘন।

জনাব তানভীর হাসান তানুকে গ্রেফতারের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মুক্তির দাবিতে এবং মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার চেয়ে জেলা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। তারা তানভীর হাসান তানুর মুক্তি ও সাংবাদিকদের নামে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এদিকে আজ রবিবার পুলিশ অসুস্থ সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ডের আবেদন বাতিল করে দেন এবং তাকে জামিনের আদেশ দেন। বিজ্ঞ আদালত এমন মানবিক সিদ্ধান্ত দিয়ে এই প্রথম অনন্য নজির গড়লেন। তবে যেসব পুলিশ সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন, মানবাধিকার লংঘনের দায়ে তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

CCD Bangladesh © 2024 All Rights Reserved.